বন্যার কারণে খোলা ফেঞ্চুগঞ্জে ৩২টি আশ্রয় কেন্দ্রে ২ হাজার বন্যার্তদেরক প্রতিদিন দুই বেলা করে রান্না করা খাবার ও শুকনো খাবার সরবরাহ করছেন জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
আশ্রয় কেন্দ্রে আসা লোকজনের মধ্যে প্রথমে খিচুরি বিতরণ করা হচ্ছিলো। তবে শুক্রবার দুপুর থেকে বন্যার্তদেরকে রান্না করা খাবার খাওয়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকে ফেঞ্চুগঞ্জ সদরের চন্ডী প্রসাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙিনায় খাবার তৈরি হচ্ছিল। সেখান থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে গাড়ি ও নৌকা যোগে পাঠানো হচ্ছে খাবার। আবার অন্যদিকে প্রস্তুত খাবার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যান জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ও ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
এদিকে আবার বানভাসি কিছু মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছেন না, চক্ষুলজ্জায় কারও কাছে খাবারও চাইতে পারছেন না তারা। এমন পরিবারের সদস্যদের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসফাকুল ইসলাম সাব্বিরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে গোপনেই তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
আসফাকুল ইসলাম সাব্বির জানান, সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিবের নির্দেশে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন আমরা দুই বেলা প্রায় ২ হাজারের বেশি মানুষকে রান্না করা খাবার খাওয়াবো। পাশাপাশি শুকনো খাবার বিতরণও অব্যাহত থাকবে। বর্তমানে ফেঞ্চুগঞ্জে বন্যা আক্রান্ত বিভিন্ন গ্রামে মোট ৩২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়াও আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে থাকা বানভাসীদের জন্য এমপি হাবিবের নির্দেশনায় চলছে ত্রাণ তৎপরতা।
তিনি আরও জানান, বন্যা কবলিত অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চান না, চক্ষুলজ্জায় কারও কাছে খাবারও চাইতে পারছেন না তারা। এমন কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে নীরবে নিভৃতে আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে পানিবন্দী মানুষের ঘরে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে। আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি, যার মধ্যে জেলা পরিষদ সদস্য, ইউপি চেয়ারম্যান ও বণিক সমিতি নেতৃবৃন্দ সহযোগিতা করছেন।
ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল্লাহ মাহমুদ জুয়েল বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত মানুষের মধ্যে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক সংগঠন, সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ সহায়তা করতে চাইলে তথ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও ফেঞ্চুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সমন্বয়ে এই তথ্য কেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে। ফেঞ্চুগঞ্জ পশ্চিম বাজার রিভার ভিউ ও চন্ডী প্রসাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তথ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করলে আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার বিতরণ ও ত্রাণ সহায়তার সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা প্রিয়াংকা বলেন, উপজেলা সদরের পার্শ্ববর্তী কুশিয়ারা নদীর পানি মারাত্মকভাবে বেড়ে যাওয়ায় উপজেলাজুড়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। তবে বন্যার্ত মানুষের প্রয়োজনীয় সহায়তা করতে উপজেলা প্রশাসন আন্তরিকভাবে প্রচেষ্টা করছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, তাই দুর্ভোগ তো কিছুটা হবেই।
তিনি আরও বলেন, ফেঞ্চুগঞ্জে ৩২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১২০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়ে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।