এলাকাবাসীর অর্থ সহায়তায় দেশে ফিরল ফেঞ্চুগঞ্জের প্রবাসী তুহিনের লাশ এলাকাবাসীর অর্থ সহায়তায় দেশে ফিরল ফেঞ্চুগঞ্জের প্রবাসী তুহিনের লাশ – ফেঞ্চুগঞ্জ নিউজ
  1. admin@fenchuganjnews.com : admin :
  2. rumelahsan80@gmail.com : Rumel Ahsan : Rumel Ahsan
১২ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ২৭শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| হেমন্তকাল| বুধবার| রাত ১১:১৩|
সর্বশেষ :
সিলেট জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত হলেন ফেঞ্চুগঞ্জের মনিরুজ্জামান খান ফেঞ্চুগঞ্জে ইয়াবা ট্যাবলেট সহ মাদক কারবারি আটক ফেঞ্চুগঞ্জে ৪ জন শিক্ষক চাকরিচ্যুত দেশে ফিরলেন ফেঞ্চুগঞ্জ বিএনপির সভাপতি ওহিদুজ্জামান ছুফি চৌধুরী ফেঞ্চুগঞ্জ বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে আগুন, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ভাটেরায় পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের দুই বগি বিচ্ছিন্ন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংস্কারের দাবিতে গণঅবস্থান ও মানববন্ধন বিএনপি ক্ষমতায় এলে ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উন্নয়ন করবে : কাইয়ুম চৌধুরী ফেঞ্চুগঞ্জে ছাত্রদল নেতা মিঠুর মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল ফেঞ্চুগঞ্জে ইউএনও’র সঙ্গে সাংবাদিকদের সৌজন্য সাক্ষাৎ

এলাকাবাসীর অর্থ সহায়তায় দেশে ফিরল ফেঞ্চুগঞ্জের প্রবাসী তুহিনের লাশ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০২৪

 

পরিবারের সচ্ছলতা ফেরানোর পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন প্রবাসীরা। কিন্তু সেই প্রবাসী মারা গেলে যেন তার থাকে না কোনো মূল্য। হয়ে যান অবহেলার পাত্র। অর্থাভাবে অনেকের মরদেহ মর্গে পড়ে থাকে মাসের পর মাস। তেমনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ছত্তিশ গ্রামের তুহিন মিয়ার(২৬) মরদেহ ১৭ দিন পড়ে ছিল হাসপাতাল মর্গে। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় মরদেহ দেশে নেওয়ার ব্যবস্থা ছিল না। আমিরাতে তুহিনের ভিসার বৈধতা নেই মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাশ দেশে পাঠাতে সাহায্য প্রার্থনা করে তার স্বজনরা।

 

যা দেখে এগিয়ে আসেন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ছত্তিশ, পিঠাইটিকর ও বাঘমারা গ্রামের বাসিন্দারা। দেশী-প্রবাসীরা অর্থ সহায়তা উত্তোলন করে টিকিটের টাকা জোগাড় করেন। বৃহস্পতিবার আরব আমিরাতের স্থানীয় সময় রাত ৩টায় দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুক্রবার সকাল ১০টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে তুহিনের মরদেহ দেশে আসে।

 

স্থানীয়রা জানান, তুহিনের মরদেহ দেশে নিয়ে আসার জন্য ওই এলাকার দেশী-প্রবাসীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ওয়াটসআপে গ্রুপ খোলা হয়। গ্রুপের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করা হয়। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সবাই টাকা দিয়ে দেন। কালেকশন করা হয় প্রায় ৫ লাখ ৪২ হাজার টাকা। সেই টাকা থেকে নিহত তুহিনের মরদেহ দেশে নিয়ে আসা বাবদ বিমান টিকেটে যা খরচ হবে এবং অবশিষ্ট যে টাকা থাকবে তা তুহিনের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে।

নিহত তুহিনের বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি ও মাতম থামছেই না। ওই তরুণের পরিবারের সদস্য ও আশপাশের প্রতিবেশীরা শোকে মুহ্যমান। তুহিন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ছত্তিশ গ্রামের বাসিন্দা। ওই গ্রামের আব্দুল্লাহ মিয়া ও রিনা বেগম দম্পতির বড় সন্তান তিনি। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে তুহিন বড়। তুহিনের স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান আছেন।

 

পরিবার সূত্র জানায়, সংসারে সচ্ছলতা আনতে তিন বছর আগে তুহিন আরব আমিরাতে যান। সেখানে কাজ করে যা পেতেন তা দিয়ে চলত সংসারের যাবতীয় খরচ। গত ১৩ অক্টোবর আরব আমিরাতের স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে পাঁচটায় দুবাইয়ের আল কুজ এলাকায় একটি পণ্যবাহী ট্রাক তুহিনকে ধাক্কা মারে। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান তুহিন।

 

তুহিনের বাড়িতে দেখা যায়, ঘরে তার মা-বাবা, ভাই-বোন ও পাশের লোকজন আহাজারি করছেন। স্বজন হারানোর শোকে মুহ্যমান সবাই। স্বজনদের কান্না ও শোকে ভারী হয়ে উঠছে সেখানকার পরিবেশ।

 

তুহিনের বাবা আব্দুল্লাহ মিয়া বলেন, ‘আমার এলাকাবাসীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমাদের ছত্তিশ, পিঠাইটিকর ও বাঘমারা গ্রামের দেশী-প্রবাসী সবার কাছে আমার পরিবার চিরকৃতজ্ঞ। সবার সহযোগিতার কারণে আমি আমার ছেলের মুখ শেষ বারের মতো দেখতে পারছি। সবার কাছে আমি চিরঋণী।’

 

ফেঞ্চুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী মো. বদরুদ্দোজা বলেন, ‘শুক্রবার বাদ আসর ছত্তিশ ঈদগাহে জানাযার নামাজ শেষে নিহত তুহিনের মরদেহ পঞ্চায়েত কবরস্থানে দাফন করা হয়। তুহিনের মরদেহ দেশে নিয়ে আসার জন্য আমাদের এলাকার দেশী-প্রবাসী যারা সহযোগিতা করেছেন সবার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ’।

 

আরব আমিরাত প্রবাসী আমির আলী বলেন, আমাদের এলাকার দেশ-প্রবাসের সকল মানুষের আর্থিক সহায়তায় নিহত তুহিনের লাশ দেশে পাঠাতে পেরেছি। প্রবাসীদের লাশ দেশে পাঠাতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে আমাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোনো ফান্ড দেওয়া হয় বা সরকারিভাবে সব খরচ বহন করে মরদেহ যদি দেশে নেওয়া হয় তখন আর এত ভোগান্তি পোহাতে হবে না। রেমিট্যান্স যোদ্ধারা সারাজীবন দেশের জন্যই রেমিট্যান্স পাঠান। তাই বৈধ কিংবা অবৈধ সব প্রবাসীর মরদেহ সরকারি খরচে দেশে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর