এক মাসের ব্যবধানে সিলেটে ফের বন্যা দেখা দিয়েছে। গেল কয়েকদিনের টানা বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার পাঁচ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। পানি ঢুকে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
কুশিয়ারা নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আমলসীদ, শেওলা ও শেরপুরেও কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই। সারিঘাটে সারি নদীর পানি ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। লোভা ও ধলাই নদীর পানিও বেড়ে চলছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা, সারি, লোভা ও ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট ও সিলেট পয়েন্টে যথাক্রমে বিপৎসীমার ১১৪ ও ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই দুই পয়েন্টে সুরমার পানি দ্রুত বাড়ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এদিকে, সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেট শহরের পানি নিষ্কাশন ব্যহত হচ্ছে। ছড়া ও খালের চেয়ে নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় উল্টো সুরমার পানি শহরে প্রবেশ করা শুরু করেছে। ফলে নগরীর সোবহানীঘাট, কালিঘাট, ঘাসিটুলা, উপশহর ও ছড়ারপাড়সহ বিভিন্ন স্থান পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে মানুষের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে দিয়েছে।
সুরমা ও কুশিয়ারাসহ জেলার সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধিও অব্যাহত রয়েছে। সুরমার পানি একাধিক পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে গত ১৫ থেকে সিলেটজুড়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছিলেন জেলার প্রায় চার লাখ মানুষ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, গেল কয়েকদিন থেকে সিলেটে অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া সিলেটের উজানে ভারতের মেঘালয় ও আসামের পাহাড়ী এলাকায়ও ভারী বর্ষন হয়েছে। এতে সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারায় পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে কোথাও নদীর ডাইক ভেঙ্গে আবার কোথাও তীর উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করা শুরু করে। সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।