বাবা সুরুজ আলীকে (৭০) নিজ হাতে দা দিয়ে গলা কেটে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে তারই ঔরসজাত পুত্র সুজাত মিয়া (২৭)। ৫দিনের রিমান্ড শেষে আদালতের সামনে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করে।
গত ৬ জুন দিবাগত রাত ২টার দিকে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের গন্ধর্বপুর গ্রামে এ নৃশংস ঘটনা ঘটে। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে মারধরের শিকার হওয়ায় এবং তালাকের হুমকি পেয়ে তাদের ফাঁসাতে সুজাত মিয়া এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
গত শনিবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলে সুজাত মিয়া।
জগন্নাথপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৬জুন সোমবার দিবাগত রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে বৃদ্ধ বাবা সুরুজ আলী নিজ ঘরে ছোট ছেলে সুজাত মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টার দিকে সুজাত মিয়া ঘুমন্ত বাবাকে গলা কেটে হত্যা করে। পরে পাশের বাড়ির লোকজনদের গিয়ে জানায়, একদল ডাকাত তার বাবাকে হত্যা করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠায়।
এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিকভাবে ৪ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ঘটনার পরদিন নিহতের মেয়ে খোদেজা বেগম অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অনুসন্ধানে সন্দেহভাজন সুজাত মিয়াকে আটক করে গত বুধবার আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার সাব ইন্সপেক্টর শামীম আল মামুন জানান, রিমান্ডে আনার পর থেকে আসামি একেকবার একেক কথা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে গত শুক্রবার তিনি তার বাবাকে গলা কেটে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
এসআই শামীম আল মামুন আরো জানান, আসামির স্ত্রী বিগত এক বছর ধরে বিদেশে রয়েছেন। তবে তিনি তার স্বামীর কাছে টাকা না পাঠিয়ে নিজের বাবার বাড়িতে টাকা পাঠানোকে কেন্দ্র করে সুজাত মিয়ার সঙ্গে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরোধ দেখা দেয়।
জগন্নাথপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, পুলিশের কাছে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করার পর ঘাতক কে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধারসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়েছে। পরে শনিবার সন্ধায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে আসামিকে সুনামগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।