সিলেটের নন্দীরগাঁও শিবের বাজারে রাতের আঁধারে পুড়িয়ে মারা হয় নৈশপ্রহরী মদচ্ছির আলীকে। পুলিশের তদন্তে বেড়িয়ে এসেছে আসল ঘটনা। মদচ্ছির হত্যার নেপথ্যের নায়ক স্থানীয় কয়েস আহমদ নোমানী এখনো রয়েছে পুলিশি ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২ সালে ১৭ এপ্রিল গভীর রাতে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক স্থানীয় সন্ত্রাসী কয়েস আহমদ নোমানী আয়শা একাডেমি স্কুল ঘরে আগুন দেয়। এতে ঘুমন্ত অবস্থায় নৈশ প্রহরী মদচ্ছিরের মৃত্যু ঘটে। ঘটনার মোড় অন্য দিকে নিতে কয়েস আহমদ নোমানী স্কুল ঘরে আগুন লাগায়।
এলাকার একাধিক সূত্রে জানা যায়, কয়েস আহমদ নোমানীর সাথে স্থানীয় আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সভাপতি আছলম খাঁর পূর্ব শত্রুতা রয়েছে। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অনেক আগে থেকে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি কয়েস আহমদ নোমানীর বোন আয়েশা আত্মহত্যা করলে আছলম খাঁর ছেলে দয়াল খাঁ আলতার ছেলে আনহারকে আসামি করে জালালাবাদ থানায় মামলা দায়ের করে। আয়েশার মৃত্যুর পর বাংলাবাজার সংলগ্ন রাস্তার পাশের ৩০ শতাংশ জায়গা খরিদা সূত্রে মালিক দেখিয়ে এলাকার কিছু স্থানীয় প্রভাবশালী লোক নিয়ে কয়েস আহমদ নোমানী জায়গা দখল করার লক্ষ্যে আয়েশা একাডেমি নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করে। প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনের সময় মৌরশী সূত্রে মালিক আছলম খাঁ বাধা প্রদান করলে ও সে এলাকার কিছু সংখ্যক সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আছলম খাঁ প্রতিষ্ঠানটি করতে বাধা প্রদান করলে কয়েস আহমদ নোমানী প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ করার পর হিংসার বশীভূত হয়ে নিজ প্রতিষ্ঠানে আগুন দেন আওয়ামী লীগ নেতা আছলম খাঁ কে ফাঁসানোর জন্য। নিহতের স্ত্রী নাজমা বেগম যখন কয়েস আহমদ নোমানীর বিরুদ্ধে জালালাবাদ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন তখন থেকে মামলার আসামি আত্মগোপন করেন।
সিলেট জালালাবাদ থানার ওসি নাজমুল হুদা বলেন, মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। আসামিকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। সিলেটের পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নৈশপ্রহরী মদচ্ছির হত্যাকান্ডকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল প্রভাবশালী একটি পক্ষ। পুলিশের তদন্তে রহস্য উদঘাটন হয়েছে। মদচ্ছির হত্যাকান্ডের মূলহোতা কয়েছ আহমদ নোমানীকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।