উৎমাছড়ায় পর্যটকদের বাধা প্রদানকারীদের এবার উল্টো সুর উৎমাছড়ায় পর্যটকদের বাধা প্রদানকারীদের এবার উল্টো সুর – ফেঞ্চুগঞ্জ নিউজ
  1. admin@fenchuganjnews.com : admin :
  2. rumelahsan80@gmail.com : Rumel Ahsan : Rumel Ahsan
১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| শরৎকাল| বৃহস্পতিবার| দুপুর ১২:৪৪|
সর্বশেষ :

উৎমাছড়ায় পর্যটকদের বাধা প্রদানকারীদের এবার উল্টো সুর

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেটের সময় : বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের পর্যটনকেন্দ্র উৎমাছড়ায় পর্যটকদের বাধা কিংবা যেতে নিষেধ করা হয়নি বলে দাবি করেছেন স্থানীয় লোকজন। তাদের দাবি, পর্যটকদের মাদক গ্রহণে নিষেধ করেছিলেন তারা।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন স্থানীয় লোকজন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে এই বৈঠক হয়।

গত রোববার কোম্পানীগঞ্জের উত্তর রনিখাই ইউনিয়নে উৎমাছড়া পর্যটনকেন্দ্রে যেতে পর্যটকদের বাধা দেওয়ার এক ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, বেড়াতে আসা লোকজনকে চলে যেতে অনুরোধ করেন স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। বেড়াতে আসা অনেকে মদ্যপান ও অশ্লীল কার্যকলাপ করে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছেন বলে অভিযোগ করেন তারা। পাশাপাশি এলাকাটি পর্যটনকেন্দ্র নয়, সেখানে যাতে তারা আর না আসেন, এমনটিও বলা হয়েছিল পর্যটকদের।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পর্যটকদের উৎমাছড়ায় যেতে বাধা দেওয়া ব্যক্তিরা স্থানীয় যুবসমাজ পরিচয়ে সেখানে যান। পর্যটকদের বাধা কিংবা নিষেধ করা হয়নি বলে বৈঠকে দাবি করেন তারা। তাদের দাবি, শহরের পোশাকের সঙ্গে গ্রাম এলাকার পোশাক সামঞ্জস্য নয়। যারা বেড়াতে যান তাঁদের পোশাক ‘শালীন’ রাখার আহ্বান জানিয়েছিলেন তারা।

রবিবার যারা পর্যটন স্পটে গিয়ে পর্যটকদের চলে আসতে বলেছিলেন, তাদের একজন হলেন যুব জমিয়ের স্থানীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুহুল আমিন সিরাজী।

প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান হয়েছে ও ভুল বুঝাবুঝির অবসান হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের একটি টিম গিয়েছিলাম সেখানে ধর্মের দাওয়াত দেয়ার জন্য। আমাদের এক ভাই ভুলে পর্যটন কেন্দ্র বন্ধের কথা বলেছে। পর্যটক আসবে, আমাদের আপত্তি নেই।

কিন্তু দাওয়াত দিতে গিয়ে কেন তারা নিজেরা পর্যটকদের চলে যেতে বলেছিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে  সিরাজী বলেন, অনেক সময় পর্যটকরা আসা যাওয়ার সময় উচ্চ শব্দে গানবাজনা করেন যেটি এলাকার মানুষের কাছে বিরক্তিকর।

বৈঠকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, পর্যটনকেন্দ্রে যেতে স্থানীয় লোকজন বাধা দিতে পারেন না। পর্যটকেরা কোনো অন্যায় কিংবা বেআইনি কাজ করলে স্থানীয় প্রাশাসনকে জানাতে হবে। পর্যটকদের নিয়ে নিজেদের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার নেই—বৈঠকে এমনটি বুঝিয়ে বলা হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ বলেন, উৎমাছড়ায় বেড়াতে যাওয়া জন্য নির্দিষ্ট কিংবা উপযুক্ত রাস্তা নেই। এ জন্য পর্যটকেরা স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িঘর মাড়িয়ে যাতায়াত করেন। এতে তারা অসুবিধায় পড়েন। বৈঠকে এমন দাবি করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই এলাকায় মাদক সেবন ও অশ্লীলতা হয়, এমনটিও দাবি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের বলা হয়েছে, অবৈধ কোনো কিছু করে থাকলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিংবা প্রশাসনকে জানাতে। আর পর্যটকদের বাধা না দিতে।

কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহার বলেন, বৈঠকে যেসব কথা বলা হয়েছে, তার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর কথাবার্তার মিল নেই। এ জন্য তিনি স্থানীয় আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলতে মঙ্গলবার বিকেলে উৎমাছড়া এলাকায় গেছেন।

‘যাঁরাই নিষেধ করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে’

উৎমাছড়ায় পর্যটকদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, এ অঞ্চলে এমন ঘটনা আগে কখনোই ঘটেনি। বিষয়টি ইউএনওকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তিনি তদন্ত করে দেখছেন। ইউএনও জানার চেষ্টা করছেন, বিষয়টি কী?

তিনি বলেন, ‘এটা কে করল, কারা করল, কেন করল, সেটা আজকের মধ্যেই ইউএনও তদন্ত করে বের করবেন। এরপর যদি আইনি ব্যবস্থা নিতে হয়, তা-ও নেওয়া হবে।’

পর্যটকেরা কি নির্বিঘ্নে উৎমাছড়ায় যেতে পারছেন?—এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সবাই সেখানে আগের মতোই যেতে পারবেন। পর্যটক তো যাচ্ছেন, তা তো বন্ধ নেই। কেউ নিষেধ করতে পারবেন না। যে বা যারাই নিষেধ করবেন, তাদের বিরুদ্ধেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া পর্যটকদের সুবিধার্থে উৎমাছড়ায় স্থানীয় প্রশাসন সব ধরনের নজরদারিও বাড়িয়েছে।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর